বিশেষ প্রতিনিধি::
নীতিমালা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারিক মধ্যে হাওরের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও জগন্নাথপুর উপজেলায় একটি প্রকল্পেরও শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। সম্প্রতি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সুনামগঞ্জ হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ পরিদর্শন করে ৭ মার্চ পর্যন্ত কাজের সময় বৃদ্ধি করেন। বর্ধিত এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলার হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধে কাজ শেষ হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।
ডগতকাল বোরবার উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর ঘুরে দেখা গেছে, হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের প্রকল্পগুলোতে কাজ চলছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বাঁধ পরিদর্শন করবেন এমন সংবাদে সব প্রকল্পে জোরেশোরে কাজ চলছে। সরেজমিনে দেখা যায় ১৩, ১৪, ১৫, ১৬নং প্রকল্পের কিছু কিছু জায়গায় এখনো মাটি পড়েনি। তবে এসব প্রকল্পে কাজ চলছে।
১৫ নং প্রকল্পের সভাপতি আবু ছালেহ জানান, অনেক দূর থেকে মাটি আনতে হচ্ছে তাই মাটির কাজ শেষ করতে কিছু বিলম্ব হচ্ছে। তিন চার দিনের মধ্যে আশা করছি মাটির কাজ শেষ হবে। অনুরূপ অভিমত অপর প্রকল্পগুলোর দায়িত্বশীলদের।
হাওরে কথা হয় ভূরাখালি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক রেজা মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, যেভাবে কাজ হচ্ছে পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে কমপক্ষে আরও এক মাস সময় লাগবে।
হাওর ব্যাষ্ঠিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ২৫ শতাংশ কিস্তিতে চারবারে অর্থ পরিশোধ করার কথা। এবছর দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ২৫ শতাংশের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ পাওয়া গেছে। অর্থের অভাবে অনেক পিআইসি কাজ করতে পারছে না।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলার কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাওর ঘুরে দেখা গেছে এখনো অনেক প্রকল্পে মাটির কাজ শেষ হয়নি, আনুষঙ্গিক কাজগুলো কোন প্রকল্পে শুরু হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও ঘাস লাগানোর কাজ কোন প্রকল্পে শুরু হয়নি। তিনি বলেন, সময় মতো কাজ শুরু না হওয়ায় আমরা বাঁধের কাজ নিয়ে চিন্তিত।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জগন্নাপুরে এবার ৩৭টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কাজের বরাদ্দ পাওয়া গেছে তিন কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, এ বছর হাওর থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। গড়ে ৭০ ভাগ মাটির কাজ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, বরাদ্দ কম পাওয়ায় পিআইসিদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কম দেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, আমরা প্রতিদিন হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করছি। চেষ্টা চলছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করার।
Leave a Reply