জগন্নাথপুর২৪ ডেস্ক::
পাল্টাপাল্টি হামলার পর ইরান ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা আপাতত প্রশমিতই বলা যায়। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া আন্তঃসীমান্ত হামলার পর গতকাল শুক্রবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। ইরানি মন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে আলোচনার বিষয় নিয়ে গতকাল পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস গিলানি বলেন, তেহরানের সঙ্গে সব ইস্যুতে কাজ করতে প্রস্তুত ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে আলাপের সময় পারস্পরিক স্বার্থ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সব ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী পাকিস্তান। সে সময় জলিল আব্বাস ইরানি প্রতিপক্ষকে নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুদেশের মধ্যকার যোগাযোগের কথা জানান। জলিল আব্বাস ইরানি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আগে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গেও ইরান-পাকিস্তান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের পঞ্জগুর শহরে হামলা চালিয়ে দুই শিশুকে হত্যা করে ইরান। তেহরান দাবি করেছিল, তারা সুন্নি মতাবলম্বী ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সংগঠন ‘জইশ আল-আদলের’ আস্তানায় হামলা চালিয়েছে।
ওই ঘটনার পর পাকিস্তান প্রথমে নিজ দেশের দূতকে তেহরান থেকে সরিয়ে নেয় এবং ইসলামাবাদে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরতে নিষেধ করে দেয়। এতেই থামেনি পাকিস্তান। গত বৃহস্পতিবার তারা বালুচিস্তান প্রদেশের সীমান্তবর্তী ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রদেশ সিস্তান-বালুচিস্তানে হামলা চালায়। এতে ৯ জন নিহত হয়। ইসলামাবাদ দাবি করে, বালুচিস্তান প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতায় যুক্ত দুটি সংগঠন বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং বালুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের (বিএলএফ) ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে তারা। তবে ইরানি গণমাধ্যমে বলা হয়, সিস্তান-বালুচিস্তানে পাকিস্তানের হামলায় নিহত সবাই বিদেশি নাগরিক।
গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের সংঘাতের আবহের মধ্যে হঠাৎ পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে এই উত্তেজনা তৈরি হয়। দুদিনের উত্তেজনার পর গতকাল সকাল থেকে উত্তেজনার পারদ নামতে থাকে।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার দাভোভে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে নিজের অংশগ্রহণের সূচি সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। আবার জলিল আব্বাস গিলানি ন্যাম সম্মেলনের কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে উগান্ডা থেকে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল পাক প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) জরুরি সভা হওয়ার কথা। সভায় সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরসহ সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা থাকবেন।